ভিডিও

মীরসরাইয়ে গণ পিটুনিতে বিএনপি নেতা নিহত 

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ০২, ২০২৪, ০২:১২ দুপুর
আপডেট: সেপ্টেম্বর ০২, ২০২৪, ০২:১৯ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

নিউজ ডেস্ক:  মীরসরাইয়ে ডাকাত সন্দেহে রফিকুল ইসলাম (৪০) নামে এক বিএনপি নেতাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় আরো অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। স্থানীয় লোকজন বিএনপি নেতা ও তাঁর সহযোগীদের বহন করা তিনটি টেক্সি ও মোটরসাইকেল জ্বালিয়ে দেয়।

রফিক উপজেলার ১৬ নং সাহেরখালী ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও কাজীরতালুক গ্রামের মরহুম তাজুল ইসলামের ছেলে। তিনি সাবেক ইউপি সদস্য ছিলেন। আহতরা হলেন, সাজ্জাদ হোসেন (২১), নুরুল করিম (২৮), সাইদুল (২২), আবদুর রহিম (২৬), নুরুজ্জামান (২৭), আবু তালিব (৩২), শহীদুল ইসলাম (৪৫), জহির (১৭), শহিদুল ইসলাম (২৮), আকবর হোসেন রনি (২২)। তাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

জানা গেছে, শনিবার মধ্যরাতে মীরসরাই অর্থনৈতিক জোন অঞ্চলে এস কিউ নামের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম তৈরির নির্মাণাধীন একটি কারখানার সামনে এ ঘটনা ঘটে। ডাকাত সন্দেহে স্থানীয় লোকজন বিএনপি নেতা ও তার সহযোগীদের আটক করে গণপিটুনি দেয়। তবে বিএনপি নেতারা বলছেন, ডাকাতির নাটক সাজিয়ে পরিকল্পিতভাবে রফিককে হত্যা করা হয়েছে। এর আগে সাহেরখালীতে একটি মৎস্য প্রকল্পের মাছ লুট করে ওই গ্রুপটি। এ সময় লুটে বাঁধা দিলে তারা পাহারাদার আনোয়ার হোসেন নামে এক জামায়াত কর্মীসহ দুজনকে কুপিয়ে জখম করে এবং তার মোটরসাইকেল জ্বালিয়ে দেয়।

এই বিষয়ে মীরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক সিফাত সুলতানা বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টায় মো. রফিক নামের এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে আনা হয়। এখানে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। এ সময় গুরুতর আহত অবস্থায় আরো ১০ জনকে আনা হয়। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। এ সময় তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের শিল্প পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক শওকত হোসেন বলেন, ‘নির্মাণাধীন এস কিউ কারখানার নিরাপত্তাব্যবস্থা বেশ দুর্বল। আগেও একবার এ কারখানায় চুরির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রাতেও দেশি অস্ত্র নিয়ে কিছু লোক কারখানায় প্রবেশের চেষ্টা করে বলে জানায় কারখানা কর্তৃপক্ষ। এতে কারখানার নিরাপত্তাকর্মী ও আশপাশের লোকজন মিলে ধাওয়া করে তাদের মারধর করে আটকে রাখেন। পরে গণপিটুনিতে আহত ব্যক্তিদের একজন মো. রফিক হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা দেশি অস্ত্র ও পুড়িয়ে ফেলা তিনটি সিএনজি টেক্সি হেফাজতে নিয়েছি আমরা। জোরারগঞ্জ থানা পুলিশসহ এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেব আমরা।’

লেফটেন্যান্ট কর্নেল আল মামুন বলেন, ‘এস কিউ কারখানা এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেখানে সেনাবাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে। বিষয়টি নজরদারিতে রেখেছি আমরা।’

এ বিষয়ে মীরসরাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহীদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘নিহত রফিক সাহেরখালী ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক। ১৫ বছর আগে তাকে নিয়ে নানা দুর্নাম থাকলেও এখন তিনি ভালো মানুষ হিসেবে এলাকায় পরিচিত। বিএনপির যেকোনো আন্দোলন সংগ্রামে অগ্রভাগের মানুষ তিনি। গতকাল রাতে সাহেরখালী এলাকায় মাছের প্রকল্প নিয়ে তার সাথে কিছু লোকের ঝামেলা হয়েছিল। সেখান থেকে রাতে ফেরার পথে এস কিউ কারখানা এলাকায় তাদের ধরে ডাকাতির কথা ছড়িয়ে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। আমি এ হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করছি।’

জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুল্লাহ আল হারুন জানান, অর্থনৈতিক অঞ্চলে মারামারির ঘটনায় রফিক উদ্দিন নামে একজন নিহত হয়েছে। তার লাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে থানায় আনা হয়েছে, লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত উদ্যোগ গ্রহণ করবো।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS